শ্রমিকদল কর্মী হত্যা
নোয়াখালীতে আ’লীগ নেতার জামিন, পিপির ‘নির্লিপ্ততার’ অভিযোগ
- আপডেট সময় ০৪:৩৮:২১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪
- / ১২৯০ বার পড়া হয়েছে
নোয়াখালীতে শ্রমিকদল কর্মী হত্যা মামলার অন্যতম আসামি আওয়ামী লীগ নেতা নাসিম উদ্দিন সুনাম কমিশনারকে জামিন দিয়েছে আদালত। শুনানিতে অদৃশ্য কারণে পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট শাহাদৎ হোসেন নির্লিপ্ত থাকার অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) এ নিয়ে নানা গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। এছাড়া দুপুরে অস্ত্র মামলায় আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি একরামুল করিম চৌধুরীর জামিন শুনানিতেও পিপি শাহাদৎ হোসেন নীরব ছিলেন বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় আইনজীবীরা চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
আসামি নাসিম উদ্দিন সুনাম নোয়াখালী পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর এবং ওই ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। গত ২৩ অক্টোবর (বুধবার) সোনাপুর এলাকা থেকে র্যাব-১১ তাকে গ্রেফতার করে। তিনি শ্রমিকদল কর্মী খোকন হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত অন্যতম আসামি।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, জেলা ও দায়রা জজ ফজলে এলাহী ভুঁইয়া বুধবার শুনানি শেষে ওই হত্যা মামলায় আসামি নাসিম উদ্দিন সুনামকে ২০ হাজার টাকা মুচলেকায় তার শ্যালক (স্ত্রীর বড়ভাই) অ্যাডভোকেট সাজ্জাদ হোসেনের জিম্মায় আগামি ১২ জানুয়ারী পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আইনজীবী বলেন, একই হত্যা মামলায় সাবেক এমপি একরামুল করিম চৌধুরীসহ অনেকে মারাত্মক অসুস্থ হয়েও কারাগারে রয়েছেন। কিন্তু রহস্যজনক কারণে এ প্রথম আওয়ামী লীগ নেতা সুনাম কমিশনারের জামিন হওয়ায় বিষয়টি সবার নজরে এসেছে। তার উপর জামিন শুনানিতে পিপির নির্লিপ্ত থাকা নিয়ে অনেকের মধ্যে চাপা গুঞ্জন সৃষ্টি হয়েছে। নতুন পিপির কাছে আমরা এটা আশা করি না।
আরও পড়ুন: নোয়াখালী আদালতের নতুন পিপি শাহাদৎ, জিপি নুরুল আমিন
জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট এবিএম জাকারিয়া বলেন, চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলায় আওয়ামী লীগ নেতার জামিন কিভাবে হয়েছে তা আমি জানি না। তবে আজ (বৃহস্পতিবার) অস্ত্র মামলায় মিথ্যা তথ্য দিয়ে সাবেক এমপি একরামের জামিন শুনানির খবরে আমি গিয়ে জামিনের বিরোধীতা করেছি। সেখানে বিরোধীতা করার মতো অন্য কাউকে দেখিনি।
জানতে চাইলে নির্লিপ্ততার অভিযোগ অস্বীকার করে আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট শাহাদৎ হোসেন বলেন, আসামি পক্ষ শারীরিক অসুস্থতার ডাক্তারী সনদ জমা দিয়েছেন। আদালত তা বিবেচনায় নিয়ে হত্যা মামলায় তাকে জামিন দিয়েছে।
অন্য সব আসামিরা একই কায়দায় সুযোগ পাবে কি-না জানতে চাইলে সরকারি এ কৌঁসুলী বলেন, ‘ডাক্তার কাউকে মৃত ঘোষণা করলে আদালত তাকে জীবিত বলার সুযোগ নেই।’
হত্যা মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি জামায়াত-বিএনপির সকাল-সন্ধ্যা হরতাল চলাকালে সদর উপজেলার দত্তেরহাটের দত্ত বাড়ির মোড়ে গণজমায়েতে অস্ত্রহাতে হামলা চালায় আসামিরা। এ সময় খোকন শ্রমিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে যাওয়ার সময় আসামিদের ছোড়া গুলিতে আহত হন। পরে স্থানীয়রা তাকে হাসপাতালে নিলে ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন। এ মামলায় আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি একরামুল করিম চৌধুরীসহ অনেকে কারাগারে আছেন।