প্রতিবাদে মানববন্ধন
সূবর্ণচরে যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ
- আপডেট সময় ০৮:২৮:৫১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪
- / ১২৭০ বার পড়া হয়েছে
নোয়াখালীর সূবর্ণচরের দক্ষিণ চর কাজী মোখলেছ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণে অনিয়ম ও নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদার মো. আলমগীরের বিরুদ্ধে। তিনি উপজেলা যুবলীগের সাবেক সহ-সভাপতি এবং জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খায়রুল আনম সেলিমের ভাতিজা। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ছবি দেখিয়ে কাজটি আলমগীর বাগিয়ে নেন বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) দুপুরে মানহীন নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করে প্রতিবাদ জানিয়েছে এলাকাবাসী। এসময় ঠিকাদার মো. আলমগীরের বিরুদ্ধে নানা শ্লোগান দেন তারা। এতে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণিপেশার লোকজন অংশগ্রহণ করে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে পিইডিপি-৪ প্রকল্পের আওতায় সূবর্ণচরের দক্ষিণ চর কাজী মোখলেছ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঁচ কক্ষ বিশিষ্ট দোতলা ভবন নির্মাণে এক কোটি ২৯ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। পরে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ছবি দেখিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খায়রুল আনম সেলিমের ভাতিজা পরিচয় দিয়ে কাজটি বাগিয়ে নেন যুবলীগ নেতা আলমগীর।
এদিকে গত কয়েকদিন আগে মানহীন ও নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে ওই ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু করেন ঠিকাদার আলমগীর। এর প্রতিবাদ করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোসাম্মৎ জয়তুন নেছাসহ এলাকাবাসী। পরে প্রধান শিক্ষককে দেখে নেওয়ার নানান হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠে ঠিকাদার আলমগীরের বিরুদ্ধে।
মানববন্ধনে চরওয়াপদা ইউনিয়ন ছাত্রদলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. রাসেল বলেন, ‘ঠিকাদার আলমগীর জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি খায়রুল আনম সেলিমের ভাতিজা। তিনি ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার সঙ্গে তোলা ছবি দেখিয়ে ক্ষমতার দাপটে বিদ্যালয় ভবনের কাজ বাগিয়ে নেন। এখন তার অনিয়মের প্রতিবাদ করায় তিনি প্রধান শিক্ষকসহ এলাকাবাসীকে হুমকি দিচ্ছেন। আমরা ফ্যাসিস্টদের দোসর এ ঠিকাদারের বিচার চাই।’
প্রধান শিক্ষক মোসাম্মৎ জয়তুন নেছা বলেন, ভবন নির্মাণে মানহীন ও নিম্নমানের সামগ্রীর ব্যবহার দেখে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করি। এ জন্য ঠিকাদার আলমগীর আমার কক্ষে এসে নানা ধরণের হুমকি দেন। বিষয়টি আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকেও অবহিত করেছি।
অভিযোগ অস্বীকার করে ঠিকাদার মো. আলমগীর বলেন, আমি যুবলীগ করি এটা সত্য। তবে শেখ হাসিনার ছবি দেখিয়ে কাজ নেওয়ার বিষয়টি সত্য নয়। দরপত্রে তিন দশমিক ৮১ শতাংশ কম টাকায় টেন্ডার দিয়ে কাজটি আমি পাই। নির্মাণ সামগ্রীতে ত্রুটি থাকলে আমি তা পরিবর্তন করে দিব।
কাজের পরিদর্শক এলজিইডির উপ-সহকারি প্রকৌশলী নুর ইসলাম বলেন, অভিযোগের পর পরিদর্শনের গিয়ে নিম্নমানের সামগ্রী দেখে ওই কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত ছাড়া কাজটি চালু করতে নিষেধ করা হয়েছে।
উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ শাহজালাল বলেন, অভিযোগ ওঠা সামগ্রীর নমুন পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে। মান ঠিক না থাকলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আল-আমিন সরকার বলেন, প্রধান শিক্ষিকার সঙ্গে খারাপ আচরণের অভিযোগ পেয়েছি। ঠিকাদার তার কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন। নিন্মমানের সামগ্রী দিয়ে ভবন নির্মাণের সুযোগ নেই। বিষয়টি দেখার জন্য উপজেলা প্রকৌশলীকে বলা হয়েছে।