নোয়াখালী ০৮:১৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কোম্পানীগঞ্জ

বিএনপির ব্যানারে যুবদল নেতা হত্যার ‘নির্দেশদাতাদের’ সংবাদ সম্মেলন

নোয়াখালী প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় ০৬:৩০:৪২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪
  • / ১২৮২ বার পড়া হয়েছে

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতা মো. শাহজাহান (পাঞ্জাবী পরা) ও মানছুরুল হক বাবর (সাদা শার্ট পরা)।

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে যুবদল নেতা ইউনুছ আলী এরশাদ (৩৯) হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত ‘নির্দেশদাতারা’ সংবাদ সম্মেলন করেছেন। রোববার (১৭ নভেম্বর) সকালে বাংলাবাজারে মুছাপুর ইউনিয়ন বিএনপির ব্যানারে ওই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

এতে বক্তব্য রাখেন, মুছাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. শাহজাহান ও তার ছোটভাই উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক মানছুরুল হক বাবর। এসময় তারা নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন। তবে নিহতের পরিবারের দাবি, ‌‘এ দুজনই যুবদল নেতা এরশাদকে হত্যার মূল নির্দেশদাতা’।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) সকালে সন্ত্রাসীদের হামলায় ওই যুবদল নেতার মৃত্যু হয়। চাঁদা না পেয়ে চরফকিরা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের জলদস্যু নিজাম ডাকাতের নেতৃত্বে তার বাহিনীর সদস্য সমীর, জাবেদ, ওবায়েদ, জিয়া, সুজন, তারেকসহ সন্ত্রাসীরা অতর্কিত হামলা চালিয়ে এরশাদকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে।

নিহতের ছোটভাই সামছুদ্দিন (৩০) বলেন, আমার ভাইয়ের হত্যাকারীরা সবাই বিএনপির নেতা মানছুরুল হক বাবর বাহিনীর সদস্য। বাবরের নির্দেশে তারা আমার ভাইকে হত্যা করেছে। মামলায় যাতে বাবরকে আসামি করা না হয় সেজন্য আমাদের পরিবারকে বিভিন্নভাবে চাপে রেখেছে প্রভাবশালীরা।

এরআগে গত শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় জানাজার সময় বক্তব্যে নিহত এরশাদের ভাগিনা রুমন দাবি করেন বিএনপির নেতা মানছুরুল হক বাবরের গুন্ডা বাহিনী আমার মামাকে প্রকাশ্য দিবালোকে হত্যা করেছে। আমরা এ ঘটনায় বাবরসহ জড়িতদের বিচার চাই। এসময় উপজেলা ও ইউনিয়ন বিএনপির শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। ওই বক্তব্যের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।

নিহত এরশাদ মাঝি।

সংবাদ সম্মেলন ডেকে বিএনপি নেতা মো. শাহজাহান বলেন, দুষ্কৃতকারীরা ছুরিকাঘাত যুবদল নেতা ইউনুছ আলী এরশাদ খুন হয়েছে। আমরা এ হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই। তবে একটি মহল আমাদের বিরুদ্ধে হত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমরা এ ঘটনার তিব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।

মানছুরুল হক বাবর বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে যুবদল নেতা হত্যার পরিকল্পনাকারী হিসেবে যে অভিযোগ উঠেছে তা প্রমাণিত হলে পদত্যাগ করে দল ছাড়বো। এরআগে তিনি জাগো নিউজের কাছে দাবি করেন, ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক নুরুল আলম সিকদার আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন।’

আরও পড়ুন: কোম্পানীগঞ্জে বিএনপি নেতার ক্যাডারদের হামলায় যুবদল নেতা নিহত

উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক নুরুল আলম সিকদার বলেন, আমিইতো মো. শাহজাহানকে মুছাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি বানিয়েছি। আমি কেন তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করবো। অন্যদিকে বিএনপির ব্যানারে সংবাদ সম্মেলনের বিষয়ে তিনি বলেন, এ বিষয়টি আমার জানা নাই। ইউনিয়ন বিএনপির নেতারাই ভালো বলতে পারবেন।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) দুপুরে নদীতে নৌকা নামানো, খালদখল ও দোকান ভিটি দখল নিয়ে দাবিকৃত চাঁদা না পেয়ে জলদস্যু নিজাম ডাকাতের নেতৃত্বে তার বাহিনীর সদস্যরা অতর্কিত হামলা চালিয়ে এরশাদকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে। এ সময় এরশাদের আরও তিনভাই আহত হন। এ ঘটনায় নয়জনের নামোল্লেখ করে আরও ১০/১২ জন অজ্ঞাত আসামির বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে।

কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গাজী মুহাম্মদ ফৌজুল আজিম বলেন, যুবদল নেতার হত্যা মামলায় এজাহারভুক্ত একজন ও সন্ধিগ্ধ আরও চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

কোম্পানীগঞ্জ

বিএনপির ব্যানারে যুবদল নেতা হত্যার ‘নির্দেশদাতাদের’ সংবাদ সম্মেলন

আপডেট সময় ০৬:৩০:৪২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে যুবদল নেতা ইউনুছ আলী এরশাদ (৩৯) হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত ‘নির্দেশদাতারা’ সংবাদ সম্মেলন করেছেন। রোববার (১৭ নভেম্বর) সকালে বাংলাবাজারে মুছাপুর ইউনিয়ন বিএনপির ব্যানারে ওই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

এতে বক্তব্য রাখেন, মুছাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. শাহজাহান ও তার ছোটভাই উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক মানছুরুল হক বাবর। এসময় তারা নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন। তবে নিহতের পরিবারের দাবি, ‌‘এ দুজনই যুবদল নেতা এরশাদকে হত্যার মূল নির্দেশদাতা’।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) সকালে সন্ত্রাসীদের হামলায় ওই যুবদল নেতার মৃত্যু হয়। চাঁদা না পেয়ে চরফকিরা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের জলদস্যু নিজাম ডাকাতের নেতৃত্বে তার বাহিনীর সদস্য সমীর, জাবেদ, ওবায়েদ, জিয়া, সুজন, তারেকসহ সন্ত্রাসীরা অতর্কিত হামলা চালিয়ে এরশাদকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে।

নিহতের ছোটভাই সামছুদ্দিন (৩০) বলেন, আমার ভাইয়ের হত্যাকারীরা সবাই বিএনপির নেতা মানছুরুল হক বাবর বাহিনীর সদস্য। বাবরের নির্দেশে তারা আমার ভাইকে হত্যা করেছে। মামলায় যাতে বাবরকে আসামি করা না হয় সেজন্য আমাদের পরিবারকে বিভিন্নভাবে চাপে রেখেছে প্রভাবশালীরা।

এরআগে গত শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় জানাজার সময় বক্তব্যে নিহত এরশাদের ভাগিনা রুমন দাবি করেন বিএনপির নেতা মানছুরুল হক বাবরের গুন্ডা বাহিনী আমার মামাকে প্রকাশ্য দিবালোকে হত্যা করেছে। আমরা এ ঘটনায় বাবরসহ জড়িতদের বিচার চাই। এসময় উপজেলা ও ইউনিয়ন বিএনপির শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। ওই বক্তব্যের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।

নিহত এরশাদ মাঝি।

সংবাদ সম্মেলন ডেকে বিএনপি নেতা মো. শাহজাহান বলেন, দুষ্কৃতকারীরা ছুরিকাঘাত যুবদল নেতা ইউনুছ আলী এরশাদ খুন হয়েছে। আমরা এ হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই। তবে একটি মহল আমাদের বিরুদ্ধে হত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমরা এ ঘটনার তিব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।

মানছুরুল হক বাবর বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে যুবদল নেতা হত্যার পরিকল্পনাকারী হিসেবে যে অভিযোগ উঠেছে তা প্রমাণিত হলে পদত্যাগ করে দল ছাড়বো। এরআগে তিনি জাগো নিউজের কাছে দাবি করেন, ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক নুরুল আলম সিকদার আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন।’

আরও পড়ুন: কোম্পানীগঞ্জে বিএনপি নেতার ক্যাডারদের হামলায় যুবদল নেতা নিহত

উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক নুরুল আলম সিকদার বলেন, আমিইতো মো. শাহজাহানকে মুছাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি বানিয়েছি। আমি কেন তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করবো। অন্যদিকে বিএনপির ব্যানারে সংবাদ সম্মেলনের বিষয়ে তিনি বলেন, এ বিষয়টি আমার জানা নাই। ইউনিয়ন বিএনপির নেতারাই ভালো বলতে পারবেন।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) দুপুরে নদীতে নৌকা নামানো, খালদখল ও দোকান ভিটি দখল নিয়ে দাবিকৃত চাঁদা না পেয়ে জলদস্যু নিজাম ডাকাতের নেতৃত্বে তার বাহিনীর সদস্যরা অতর্কিত হামলা চালিয়ে এরশাদকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে। এ সময় এরশাদের আরও তিনভাই আহত হন। এ ঘটনায় নয়জনের নামোল্লেখ করে আরও ১০/১২ জন অজ্ঞাত আসামির বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে।

কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গাজী মুহাম্মদ ফৌজুল আজিম বলেন, যুবদল নেতার হত্যা মামলায় এজাহারভুক্ত একজন ও সন্ধিগ্ধ আরও চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।