নোয়াখালী ০৬:৪৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৪, ৬ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পকেট কমিটি গঠনের অভিযোগ

কোম্পানীগঞ্জে বিএনপি নেতাদের গালে জুতা মারার মিছিল

কোম্পানীগঞ্জ প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় ১০:৩৮:৪৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩০ জুন ২০২৪
  • / ১২৯৫ বার পড়া হয়েছে

বিএনপির স্থায়ী কমিটির প্রয়াত সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের নিজ এলাকা নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির নেতাদের গালে জুতা মারার বিক্ষোভ মিছিল করেছে দলীয় নেতাকর্মীরা।

শনিবার (২৯ জুন) বিকেলে চরহাজারী ইউনিয়ন পরিষদের সামনে অবৈধ কমিটি ঘোষণার প্রতিবাদে ডাকা সমাবেশ শেষে ওই মিছিল বের করা হয়।

মিছিলে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা শ্লোগান তোলেন, ‌’শিকদারের গালে গালে জুতা মারো তালে তালে। বুদ্ধি রিপনের গালে গালে জুতা মারো তালে তালে। অবৈধ কমিটি মানিনা মানবো না। টাকা খেয়ে কমিটি মানবো না মানবো না’

নুরুল আলম শিকদার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও মাহমুদুল হাসান রিপন (বুদ্ধি রিপন) সদস্য সচিব। গত ২০২১ সালের ৮ অক্টোবর (শুকবার) এ দু’জনের নেতৃত্বে ৪৮ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করে জেলা বিএনপি। কমিটিকে ৯০ দিনের মধ্যে কাউন্সিলের মাধ্যমে ইউনিয়ন কমিটি গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়। এ কমিটির বিরুদ্ধে তখন ঝাড়ু মিছিলও করেছিল বিএনপি নেতাকর্মীরা।

প্রতিবাদ সমাবেশে বিএনপি নেতা গাজী মো, আলমগীরের নেতৃত্বে আব্দুল মজিদ মেম্বার, হারুন অর রশীদ ভূঞা, আবু তাহের, মো. সফি উল্যাহ (মন্ত্রী সফি), নূরুল হুদা বাচ্চু, সেলিম মাহমুদ, জয়নাল আবেদীন, মোর্শেদ আলম, আব্দুল হক হকসাব, কামাল উদ্দীন, আব্দুর রহীম, আবদুল মতিন, রবিউল আলম, সেলিম ড্রাইভার প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, ২৮ মাস পর মেয়াদোত্তীর্ণ আহবায়ক কমিটি গত শুক্রবার (২৮ জুন) নুরুল আলম শিকাদের মুছাপুরের বাড়িতে কাউন্সিল ছাড়া নিজেদের লোক দিয়ে আট ইউনিয়নের পকেট কমিটি গঠন করেন। এতে দীর্ঘদিন বিদেশে অবস্থান করা এবং এলাকার বাহিরে থাকা এমনকি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে গা-ভাসানো লোকজনকে কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়েছে। এ কমিটি বাতিল করে কাউন্সিলের মাধ্যমে কর্মীবান্ধব লোকদের দায়িত্ব দিতে হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলা বিএনপির এক নেতা বলেন, ‘নেতারা টাকার বিনিময়ে নিষ্ক্রিয় লোকদের দিয়ে বিএনপির কমিটি করেছেন। এ জন্য উপজেলা বিএনপির শিকদার-রিপন দায়ী। এ দুজনের লোভের কারণে মওদুদ আহমদের মতো সিনিয়র নেতার এলাকায় বিএনপি আজ বিলুপ্তির পথে।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পদ পাওয়া সিরাজপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মাইন উদ্দিন মাসুম চট্টগ্রামে ব্যবসা করেন। চরপার্বতী ইউনিয়নের সভাপতি রুপপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্রে চাকরী করেন। চরহাজারী ইউনিয়ন সভাপতি নুরনবী বাবুল ঢাকায় ব্যবসা করেন। চরকাঁকড়া ইউনিয়ণ সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী সক্রিয় কর্মী ছিলেন। চরফকিরা ইউনিয়ন সভাপতি গোলাম রাব্বানী বিপ্লব উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতা মিজানুর রহমান বাদলে পক্ষে সক্রিয় ছিলেন। রামপুর ইউনিয়ন সভাপতি আনছার উল্যাহ বর্তমানে আমেরিকায় বসবাস করেন। সাধারণ সম্পাদক আলমাছ খান বাহাদুর স্বপরিবারে ঢাকায় থাকেন। মুছাপুর ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মাইন উদ্দিন মাস্টার আমেরিকা থাকেন। কিছুদিন আগে তিনি টুুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর কবর জিয়ারত করে ফেসবুকে ষ্ট্যাটাস দিয়েছে।

এ সব বিষয়ে জানতে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক নুরুল আলম শিকদারকে বার বার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

তবে উপজেলা সদস্য সচিব মাহমুদুর রহমান রিপন আট ইউনিয়নের কমিটি ঘোষণার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, সভা ডেকে নেতাকর্মীদের সামনে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। বিএনপি বড়দল কে কোথায় জুতা মিছিল করেছে তা আমার জানা নেই।

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুর রহমানের কাছে জানতে ফোন করা হলে তিনি মিটিংয়ে আছেন এ বিষয়ে পরে কথা বলবেন বলে ফোন কেটে দেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

পকেট কমিটি গঠনের অভিযোগ

কোম্পানীগঞ্জে বিএনপি নেতাদের গালে জুতা মারার মিছিল

আপডেট সময় ১০:৩৮:৪৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩০ জুন ২০২৪

বিএনপির স্থায়ী কমিটির প্রয়াত সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের নিজ এলাকা নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির নেতাদের গালে জুতা মারার বিক্ষোভ মিছিল করেছে দলীয় নেতাকর্মীরা।

শনিবার (২৯ জুন) বিকেলে চরহাজারী ইউনিয়ন পরিষদের সামনে অবৈধ কমিটি ঘোষণার প্রতিবাদে ডাকা সমাবেশ শেষে ওই মিছিল বের করা হয়।

মিছিলে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা শ্লোগান তোলেন, ‌’শিকদারের গালে গালে জুতা মারো তালে তালে। বুদ্ধি রিপনের গালে গালে জুতা মারো তালে তালে। অবৈধ কমিটি মানিনা মানবো না। টাকা খেয়ে কমিটি মানবো না মানবো না’

নুরুল আলম শিকদার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও মাহমুদুল হাসান রিপন (বুদ্ধি রিপন) সদস্য সচিব। গত ২০২১ সালের ৮ অক্টোবর (শুকবার) এ দু’জনের নেতৃত্বে ৪৮ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করে জেলা বিএনপি। কমিটিকে ৯০ দিনের মধ্যে কাউন্সিলের মাধ্যমে ইউনিয়ন কমিটি গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়। এ কমিটির বিরুদ্ধে তখন ঝাড়ু মিছিলও করেছিল বিএনপি নেতাকর্মীরা।

প্রতিবাদ সমাবেশে বিএনপি নেতা গাজী মো, আলমগীরের নেতৃত্বে আব্দুল মজিদ মেম্বার, হারুন অর রশীদ ভূঞা, আবু তাহের, মো. সফি উল্যাহ (মন্ত্রী সফি), নূরুল হুদা বাচ্চু, সেলিম মাহমুদ, জয়নাল আবেদীন, মোর্শেদ আলম, আব্দুল হক হকসাব, কামাল উদ্দীন, আব্দুর রহীম, আবদুল মতিন, রবিউল আলম, সেলিম ড্রাইভার প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, ২৮ মাস পর মেয়াদোত্তীর্ণ আহবায়ক কমিটি গত শুক্রবার (২৮ জুন) নুরুল আলম শিকাদের মুছাপুরের বাড়িতে কাউন্সিল ছাড়া নিজেদের লোক দিয়ে আট ইউনিয়নের পকেট কমিটি গঠন করেন। এতে দীর্ঘদিন বিদেশে অবস্থান করা এবং এলাকার বাহিরে থাকা এমনকি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে গা-ভাসানো লোকজনকে কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়েছে। এ কমিটি বাতিল করে কাউন্সিলের মাধ্যমে কর্মীবান্ধব লোকদের দায়িত্ব দিতে হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলা বিএনপির এক নেতা বলেন, ‘নেতারা টাকার বিনিময়ে নিষ্ক্রিয় লোকদের দিয়ে বিএনপির কমিটি করেছেন। এ জন্য উপজেলা বিএনপির শিকদার-রিপন দায়ী। এ দুজনের লোভের কারণে মওদুদ আহমদের মতো সিনিয়র নেতার এলাকায় বিএনপি আজ বিলুপ্তির পথে।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পদ পাওয়া সিরাজপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মাইন উদ্দিন মাসুম চট্টগ্রামে ব্যবসা করেন। চরপার্বতী ইউনিয়নের সভাপতি রুপপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্রে চাকরী করেন। চরহাজারী ইউনিয়ন সভাপতি নুরনবী বাবুল ঢাকায় ব্যবসা করেন। চরকাঁকড়া ইউনিয়ণ সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী সক্রিয় কর্মী ছিলেন। চরফকিরা ইউনিয়ন সভাপতি গোলাম রাব্বানী বিপ্লব উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতা মিজানুর রহমান বাদলে পক্ষে সক্রিয় ছিলেন। রামপুর ইউনিয়ন সভাপতি আনছার উল্যাহ বর্তমানে আমেরিকায় বসবাস করেন। সাধারণ সম্পাদক আলমাছ খান বাহাদুর স্বপরিবারে ঢাকায় থাকেন। মুছাপুর ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মাইন উদ্দিন মাস্টার আমেরিকা থাকেন। কিছুদিন আগে তিনি টুুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর কবর জিয়ারত করে ফেসবুকে ষ্ট্যাটাস দিয়েছে।

এ সব বিষয়ে জানতে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক নুরুল আলম শিকদারকে বার বার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

তবে উপজেলা সদস্য সচিব মাহমুদুর রহমান রিপন আট ইউনিয়নের কমিটি ঘোষণার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, সভা ডেকে নেতাকর্মীদের সামনে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। বিএনপি বড়দল কে কোথায় জুতা মিছিল করেছে তা আমার জানা নেই।

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুর রহমানের কাছে জানতে ফোন করা হলে তিনি মিটিংয়ে আছেন এ বিষয়ে পরে কথা বলবেন বলে ফোন কেটে দেন।