উপজেলার চেয়ে সংসদ নির্বাচনে বেশি অনিয়ম হয়েছে: কাদের মির্জা
- আপডেট সময় ০৮:৩৫:১৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ জুন ২০২৪
- / ১২৮৪ বার পড়া হয়েছে
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা বলেছেন, এবারের উপজেলা নির্বাচনের চেয়ে বিগত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বেশি অনিয়ম হয়েছে। ওই নির্বাচনে নেতারা টাকা দিয়ে নারীদের সারাদিন লাইনে দাঁড় করিয়ে রাখেন। যাতে কর্মকর্তারা গিয়ে লাইনে ভোটার দেখেন।
শুক্রবার (৭ জুন) বিকেলে বসুরহাট পৌরসভা মিলনায়তনে উপজেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ও দুই ভাইস চেয়ারম্যানের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। কাদের মির্জার বক্তব্যটি দলের নেতা-কর্মীরা ফেসবুকে লাইভে প্রচার করেন।
গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোম্পানীগঞ্জ ও কবিরহাট উপজেলা নিয়ে গঠিত নোয়াখালী-৫ আসন থেকে টানা চতুর্থবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। মেয়র আবদুল কাদের মির্জা ওবায়দুল কাদেরের ছোটভাই।
কাদের মির্জা বলেন, ‘সদ্য সমাপ্ত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চেয়েও বেশি অনিয়ম হয়েছে বিগত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে। ভোটের অনিয়ম না, আমাদের নেতা-কর্মীদের অনিয়ম হয়েছে গত পার্লামেন্ট নির্বাচনে। ১৫-২০ জন নারী এনে ৫০০ টাকা করে দিয়ে লাইনে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। কোনো কর্মকর্তা কিংবা আমরা যখন যাই, সেখানে তখন তাদের দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়েছে। ভোট হয়েছে এই সিস্টেমে। মিথ্যা কথা বলেছি?…না। এবারের নির্বাচনেও (উপজেলা পরিষদ) ওরাই (কাদের মির্জার প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী) অনিয়ম করেছে। চরকাঁকড়ার ৭ নম্বর ওয়ার্ডে আমাদের সঙ্গে থাকা এক ছেলে একাই ১০০ ভোট মেরেছে দোয়াত-কলম প্রতীকে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সমাজ থেকে একটা জিনিস আমরা দূর করতে পারিনি। সেটা হলো দুর্নীতি। দুর্নীতি আমাদের সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে গেছে। এই থেকে আমাদের সমাজকে রক্ষা করতে হবে, এর কোনো বিকল্প নেই। যে শিক্ষকদের সবচেয়ে বেশি সম্মান করত দেশের মানুষ, সেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো আজকে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতিতে ডুবে গেছে।’
কাদের মির্জা বলেন, ‘থানায় গিয়ে কারও ইজ্জত-সম্মান থাকে না। টাকা দেবেন, আপনি ভদ্রলোক। টাকা দেবেন না আপনাকে লাথি মেরে বের করে দিবে। একটা সালিসও তারা শেষ করতে পারে না। থানায় ঘুরতে ঘুরতে মানুষের স্যান্ডেলের তলা ক্ষয় হয়ে গেছে। বিচার নাই। মানুষ আজকে বিচার পায় না। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হবে, এটার বিকল্প নেই। ন্যায় কথা বলতে গিয়ে নিজের পরিবারের বিরুদ্ধে যদি যায়, সে কথা বলতে হবে।’
বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘অন্যায়কারী আপনাদের ভাই হলেও কোনো দিন প্রশ্রয় দেবেন না। আমি আমার ভাইয়ের বিরুদ্ধে ইলেকশন করেছি, ওপরে আল্লাহ জানে। আমি করেছি মনেপ্রাণে। আমি করেছি ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে বেয়াদবির জন্য। আমার সঙ্গে বেয়াদবির জন্য। আমরা যখন যার জন্য কাজ করি ঈমানদারির সঙ্গে করি।’
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আবদুল কাদের মির্জা ছাড়াও নবনির্বাচিত উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম শরীফ চৌধুরী পিপুল, দুই ভাইস চেয়ারম্যান মুহাম্মদ জসিম উদ্দিন, পারভীন আক্তারসহ উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতারা বক্তব্য দেন।
উল্লেখ্য, গত ২৯ মে তৃতীয় ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কোম্পানীগঞ্জে ভোট হয়। এতে কাদের মির্জার ছোট ভাই শাহাদাত হোসেন ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বাদল চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেন। তবে কাদের মির্জা তাদের বিরুদ্ধে গিয়ে ঢাকার ব্যবসায়ী গোলাম শরীফ চৌধুরীকে পিপুলকে সমর্থন দেন।