নোয়াখালী ১২:৫২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চিত্রা হরিণ, শান্ত প্রকৃতি আর সবুজে ঘেরা নিঝুম দ্বীপ

ভ্রমণ ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১২:০৭:১৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২২
  • / ৫২৬ বার পড়া হয়েছে

অপরূপ সৌন্দর্যের দেশ আমাদের বাংলাদেশ। সবুজে ঘেরা এদেশের বিভিন্ন প্রান্তে রয়েছে অনেক সুন্দর সুন্দর জায়গা। এমনি সুন্দর একটি জায়গার নাম হচ্ছে নিঝুম দ্বীপ। নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলার অন্তর্গত ছোট একটি দ্বীপ নিঝুম দ্বীপ।

এটি মূলত একটি চর, যার পুর্ব নাম ছিল চর ওসমান। বল্লার চর, কমলার চর, চর ওসমান ও চর মুরি এই চারটি চরের সমন্বয়ে গঠিত হয়েছে এই দ্বীপ। ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দের দিকে এই দ্বীপটি জেগে উঠে। প্রথমদিকে এই দ্বীপে কোন লোকবসতি ছিলনা। পরবর্তীতে বন বিভাগ এই চরে চার জোড়া হরিণ ছাড়ে।

বর্তমানে এই দ্বীপটি হরিণের অভয়ারণ্য। দ্বীপটি নোনা পানি বেষ্টিত এবং অনেকে একে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট বলে দাবি করেন। মাইলের পর মাইল কেওড়া বন আর ফাঁকে ফাঁকে লুকিয়ে থাকা হরিণ হচ্ছে এই বনের প্রধান আকর্ষণ। কেওড়া ছাড়াও রয়েছে আরো অনেক প্রজাতির বৃক্ষ। বন বিভাগ এই দ্বীপের শোভা বর্ধনের জন্য আরো অনেক উদ্যোগ গ্রহণের পরিকল্পনা করছে।

নিঝুম দ্বীপে মহিষ এবং হরিণ ছাড়া হিংস্র কোন প্রাণী নেই। এখানে প্রায় ৩৫ প্রজাতির পাখি রয়েছে। এই দ্বীপে শীতকালে আসে নানারকমের অতিথি পাখি এবং নানারকমের হাঁস। বর্ষাকালে এখানে ইলিশ মাছ পাওয়া যায়। অন্যান্য সময় পাওয়া যায় চেউয়া মাছ। এই মাছ দিয়ে শুঁটকিও বানান স্থানীয়রা।

আশেপাশে ঘুরে দেখার জন্য রয়েছে গাইড। দ্বীপের ভেতর চলাচলের জন্য রয়েছে রিক্সা এবং মোটরসাইকেল। এই দ্বীপটি আসলেই নিশ্চুপ, নিঝুম। বনের ভেতর দিয়ে নৌকা দিয়েও ঘুরে বেড়ানো যায়। সবুজ বনের মাঝখান দিয়ে নৌকা করে ঘুরে বেড়ানো অসাধারণ রোমাঞ্চ তৈরি করবে। নিঝুম দ্বীপে বসে উপভোগ করতে পারেন সূর্যাস্ত।

অনেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এই দ্বীপে ঘুরতে আসেন হরিণ দেখতে। যদিও এই দ্বীপ বর্ষাকালেই বেশি সুন্দর, তবে বর্ষাকালে বেশি দর্শনার্থীরা আসেন না। শীত কিংবা গ্রীষ্মেই পর্যটকদের ভিড় থাকে। প্রকৃতির কোলে অসাধারণ কিছু সময় কাটাতে সুন্দর এই দ্বীপটি ঘুরে আসতে পারেন।

সবুজের সমারোহ, পাখির ঢাক, কচি ঘাসের উপর দিয়ে হরিণের ছুটোছুটি, বালুচরের পাশে বিশাল সবুজ মাঠ শহুরে ব্যস্ততা থেকে দূরে উপভোগ্য কিছু সময় উপহার দিবে। নামের মতই দ্বীপটি অনেক নিরব। অনেকেই ক্যাম্পিং করতে নিঝুম দ্বীপ যায়।

নিঝুম দ্বীপে যেতে হলে প্রথমে যেতে হবে নোয়াখালী। ট্রেনে কিংবা বাসে করে যেতে পারেন নোয়াখালী। আবার লঞ্চেও যাওয়া যায়। সেক্ষেত্রে সদরঘাট থেকে লঞ্চে করে যেতে হবে হাতিয়া। যাতায়াত পথ যদিও অতটা উন্নত নয়। হাতিয়া থেকে ট্রলার কিংবা লঞ্চে করে নিঝুম দ্বীপ যাওয়া যায়।

নিউজটি শেয়ার করুন

চিত্রা হরিণ, শান্ত প্রকৃতি আর সবুজে ঘেরা নিঝুম দ্বীপ

আপডেট সময় ১২:০৭:১৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২২

অপরূপ সৌন্দর্যের দেশ আমাদের বাংলাদেশ। সবুজে ঘেরা এদেশের বিভিন্ন প্রান্তে রয়েছে অনেক সুন্দর সুন্দর জায়গা। এমনি সুন্দর একটি জায়গার নাম হচ্ছে নিঝুম দ্বীপ। নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলার অন্তর্গত ছোট একটি দ্বীপ নিঝুম দ্বীপ।

এটি মূলত একটি চর, যার পুর্ব নাম ছিল চর ওসমান। বল্লার চর, কমলার চর, চর ওসমান ও চর মুরি এই চারটি চরের সমন্বয়ে গঠিত হয়েছে এই দ্বীপ। ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দের দিকে এই দ্বীপটি জেগে উঠে। প্রথমদিকে এই দ্বীপে কোন লোকবসতি ছিলনা। পরবর্তীতে বন বিভাগ এই চরে চার জোড়া হরিণ ছাড়ে।

বর্তমানে এই দ্বীপটি হরিণের অভয়ারণ্য। দ্বীপটি নোনা পানি বেষ্টিত এবং অনেকে একে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট বলে দাবি করেন। মাইলের পর মাইল কেওড়া বন আর ফাঁকে ফাঁকে লুকিয়ে থাকা হরিণ হচ্ছে এই বনের প্রধান আকর্ষণ। কেওড়া ছাড়াও রয়েছে আরো অনেক প্রজাতির বৃক্ষ। বন বিভাগ এই দ্বীপের শোভা বর্ধনের জন্য আরো অনেক উদ্যোগ গ্রহণের পরিকল্পনা করছে।

নিঝুম দ্বীপে মহিষ এবং হরিণ ছাড়া হিংস্র কোন প্রাণী নেই। এখানে প্রায় ৩৫ প্রজাতির পাখি রয়েছে। এই দ্বীপে শীতকালে আসে নানারকমের অতিথি পাখি এবং নানারকমের হাঁস। বর্ষাকালে এখানে ইলিশ মাছ পাওয়া যায়। অন্যান্য সময় পাওয়া যায় চেউয়া মাছ। এই মাছ দিয়ে শুঁটকিও বানান স্থানীয়রা।

আশেপাশে ঘুরে দেখার জন্য রয়েছে গাইড। দ্বীপের ভেতর চলাচলের জন্য রয়েছে রিক্সা এবং মোটরসাইকেল। এই দ্বীপটি আসলেই নিশ্চুপ, নিঝুম। বনের ভেতর দিয়ে নৌকা দিয়েও ঘুরে বেড়ানো যায়। সবুজ বনের মাঝখান দিয়ে নৌকা করে ঘুরে বেড়ানো অসাধারণ রোমাঞ্চ তৈরি করবে। নিঝুম দ্বীপে বসে উপভোগ করতে পারেন সূর্যাস্ত।

অনেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এই দ্বীপে ঘুরতে আসেন হরিণ দেখতে। যদিও এই দ্বীপ বর্ষাকালেই বেশি সুন্দর, তবে বর্ষাকালে বেশি দর্শনার্থীরা আসেন না। শীত কিংবা গ্রীষ্মেই পর্যটকদের ভিড় থাকে। প্রকৃতির কোলে অসাধারণ কিছু সময় কাটাতে সুন্দর এই দ্বীপটি ঘুরে আসতে পারেন।

সবুজের সমারোহ, পাখির ঢাক, কচি ঘাসের উপর দিয়ে হরিণের ছুটোছুটি, বালুচরের পাশে বিশাল সবুজ মাঠ শহুরে ব্যস্ততা থেকে দূরে উপভোগ্য কিছু সময় উপহার দিবে। নামের মতই দ্বীপটি অনেক নিরব। অনেকেই ক্যাম্পিং করতে নিঝুম দ্বীপ যায়।

নিঝুম দ্বীপে যেতে হলে প্রথমে যেতে হবে নোয়াখালী। ট্রেনে কিংবা বাসে করে যেতে পারেন নোয়াখালী। আবার লঞ্চেও যাওয়া যায়। সেক্ষেত্রে সদরঘাট থেকে লঞ্চে করে যেতে হবে হাতিয়া। যাতায়াত পথ যদিও অতটা উন্নত নয়। হাতিয়া থেকে ট্রলার কিংবা লঞ্চে করে নিঝুম দ্বীপ যাওয়া যায়।