নোয়াখালী ১০:৪২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ৪ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সোনাইমুড়ীতে মহিলা জামায়াতের কুরআন তালিমে ভাঙচুরের অভিযোগ

সোনাইমুড়ী সংবাদদাতা
  • আপডেট সময় ০২:১২:২৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫
  • / ১২৭৩ বার পড়া হয়েছে

নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে মহিলা জামায়াতের কুরআন তালিমে হামলার অভিযোগ উঠেছে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) বিকেলে উপজেলার দেওটি ইউনিয়নের উত্তর দেওটি মাঈন উদ্দিন ব্যাপারি বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, জামায়াতের মহিলা বিভাগের উদ্যোগে কুরআন তালিমের আয়োজন করা হয়। বিকেলে অনুষ্ঠান শুরুর আগমূহুর্তে সেখানে স্বেচ্ছাসেবক দলের দেওটি ইউনিয়ন কমিটির সদস্য মোহাম্মদ রবিন, শাহ আলম ও মো. লিটন সহ কয়েকজন মিলে সেখানে তাদের অনুমতি না নিয়ে এই প্রোগ্রাম আয়োজন করার বিষয়ে জানতে চেয়ে জামায়াতের মহিলা নেত্রীদের সাথে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে তাদের হুমকি-ধমকি দিয়ে কয়েকটি চেয়ার ভাঙচুর করে সভাস্থল পণ্ড করা হয়। ঘটনার একটি ভিডিও ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

ভিডিওতে দেখা যায়, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মো. রবিন মহিলা জামায়াতের এক কর্মীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘রাজনৈতিক তালিম এটা। রাজনৈতিক তালিম করতে আসছিস তোরা। তুই তালিম করতে আসছিস, তোর চোখ দেখা যায়, হাত দেখা যায়! শয়তান! তোর নিজের পর্দার ঠিক নাই, আরেকজনরে পর্দা করতে বলিস। তুই বাড়িতে আসছিস রাজনৈতিক আলাপ করতে।’

জামায়াতে ইসলামের দেওটি ইউনিয়ন আমির মো. সাইফুল ইসলাম জানান, আমেরিকা প্রবাসী আবদুল ওয়াদুদের ঘরের উঠোনে মহিলা জামায়াত কুরআন তালিমের আয়োজন করেন। প্রবাসী আবদুল ওয়াদুদ নিজেও আমাদের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত এবং তিনি নিজেই এই অনুষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষকতা করেন।

তার স্ত্রীও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তাহলে আর কার কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে? হামলা ও ভাঙচুরের বিষয়ে জানতে স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য মোহাম্মদ রবিনের মুঠোফোনে একাধিক বার চেষ্টা করা হলেও সংযোগ বন্ধ পাওয়া যায়।

দেওটি ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মো. ফরহাদ হোসেন সুজন বলেন, ওরা (জামায়াত) একটা বাড়িতে হঠাৎ করে ডেকোরেশনের চেয়ার নিয়ে আসছে এবং প্যান্ডেল সাজাচ্ছে। ওই বাড়ির লোকজনের পক্ষ থেকে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মো. রবিন কেন এসব আনা হয়েছে জিজ্ঞেস করলে ওরা সেখানে মহিলা তালিম করবে বলে জানায়।

রবিনের দাবি, মহিলা তালিম তো সাধারণত ঘরের ভেতরে, পর্দার ভেতরে হয়। এভাবে বড় করে ডেকোরেশনের চেয়ার এনে তো মহিলা তালিম হয়না। হলেও তো বাড়ির লোকজনের জানার কথা। আমরা কেউ তো সেটা জানতাম না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সোনাইমুড়ী উপজেলা জামায়াতের আমির মো. হানিফ বলেন, এই হামলা ছিল নারীদের গণতান্ত্রিক অধিকার ও শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে নগ্ন হস্তক্ষেপের জঘন্য উদাহরণ। নিরীহ মহিলা কর্মীদের উপর হামলা চালিয়ে তারা প্রমাণ করেছে, তারা গণতন্ত্র ও রাজনৈতিক সহনশীলতা মানতে চায় না।

সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ খোরশেদ আলম বলেন, দেওটিতে মহিলা জামায়াতের অনুষ্ঠান পণ্ডের বিষয়টি মৌখিকভাবে শুনেছি। আমরা খোঁজ নিয়ে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেবো।

নিউজটি শেয়ার করুন

সোনাইমুড়ীতে মহিলা জামায়াতের কুরআন তালিমে ভাঙচুরের অভিযোগ

আপডেট সময় ০২:১২:২৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫

নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে মহিলা জামায়াতের কুরআন তালিমে হামলার অভিযোগ উঠেছে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) বিকেলে উপজেলার দেওটি ইউনিয়নের উত্তর দেওটি মাঈন উদ্দিন ব্যাপারি বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, জামায়াতের মহিলা বিভাগের উদ্যোগে কুরআন তালিমের আয়োজন করা হয়। বিকেলে অনুষ্ঠান শুরুর আগমূহুর্তে সেখানে স্বেচ্ছাসেবক দলের দেওটি ইউনিয়ন কমিটির সদস্য মোহাম্মদ রবিন, শাহ আলম ও মো. লিটন সহ কয়েকজন মিলে সেখানে তাদের অনুমতি না নিয়ে এই প্রোগ্রাম আয়োজন করার বিষয়ে জানতে চেয়ে জামায়াতের মহিলা নেত্রীদের সাথে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে তাদের হুমকি-ধমকি দিয়ে কয়েকটি চেয়ার ভাঙচুর করে সভাস্থল পণ্ড করা হয়। ঘটনার একটি ভিডিও ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

ভিডিওতে দেখা যায়, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মো. রবিন মহিলা জামায়াতের এক কর্মীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘রাজনৈতিক তালিম এটা। রাজনৈতিক তালিম করতে আসছিস তোরা। তুই তালিম করতে আসছিস, তোর চোখ দেখা যায়, হাত দেখা যায়! শয়তান! তোর নিজের পর্দার ঠিক নাই, আরেকজনরে পর্দা করতে বলিস। তুই বাড়িতে আসছিস রাজনৈতিক আলাপ করতে।’

জামায়াতে ইসলামের দেওটি ইউনিয়ন আমির মো. সাইফুল ইসলাম জানান, আমেরিকা প্রবাসী আবদুল ওয়াদুদের ঘরের উঠোনে মহিলা জামায়াত কুরআন তালিমের আয়োজন করেন। প্রবাসী আবদুল ওয়াদুদ নিজেও আমাদের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত এবং তিনি নিজেই এই অনুষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষকতা করেন।

তার স্ত্রীও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তাহলে আর কার কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে? হামলা ও ভাঙচুরের বিষয়ে জানতে স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য মোহাম্মদ রবিনের মুঠোফোনে একাধিক বার চেষ্টা করা হলেও সংযোগ বন্ধ পাওয়া যায়।

দেওটি ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মো. ফরহাদ হোসেন সুজন বলেন, ওরা (জামায়াত) একটা বাড়িতে হঠাৎ করে ডেকোরেশনের চেয়ার নিয়ে আসছে এবং প্যান্ডেল সাজাচ্ছে। ওই বাড়ির লোকজনের পক্ষ থেকে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মো. রবিন কেন এসব আনা হয়েছে জিজ্ঞেস করলে ওরা সেখানে মহিলা তালিম করবে বলে জানায়।

রবিনের দাবি, মহিলা তালিম তো সাধারণত ঘরের ভেতরে, পর্দার ভেতরে হয়। এভাবে বড় করে ডেকোরেশনের চেয়ার এনে তো মহিলা তালিম হয়না। হলেও তো বাড়ির লোকজনের জানার কথা। আমরা কেউ তো সেটা জানতাম না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সোনাইমুড়ী উপজেলা জামায়াতের আমির মো. হানিফ বলেন, এই হামলা ছিল নারীদের গণতান্ত্রিক অধিকার ও শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে নগ্ন হস্তক্ষেপের জঘন্য উদাহরণ। নিরীহ মহিলা কর্মীদের উপর হামলা চালিয়ে তারা প্রমাণ করেছে, তারা গণতন্ত্র ও রাজনৈতিক সহনশীলতা মানতে চায় না।

সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ খোরশেদ আলম বলেন, দেওটিতে মহিলা জামায়াতের অনুষ্ঠান পণ্ডের বিষয়টি মৌখিকভাবে শুনেছি। আমরা খোঁজ নিয়ে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেবো।