নোয়াখালী ০৮:৩৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পর্নোগ্রাফি মামলায় আসামি

হাতিয়ায় দু’সপ্তাহ ধরে ‘পলাতক’ চার শিক্ষক

নোয়াখালী প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় ১০:০৭:০১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ মে ২০২৪
  • / ১২৯২ বার পড়া হয়েছে

গ্রেফতার এড়াতে স্কুলে দু’সপ্তাহ ধরে ‘অনুপুস্থিত’ চার শিক্ষক

নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চার শিক্ষক গত ১৪ দিন ধরে অনুপস্থিত। এতে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হলেও অদৃশ্য কারণে কর্তৃপক্ষ নীরব বলে অভিযোগ উঠেছে।

পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এক শিক্ষক আইটিসিটি আইনে মামলা করার পর থেকে তারা পলাতক রয়েছেন।

জানা গেছে, হাতিয়া উপজেলার জাহাজমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমির হোসেন (৫২), মধ্য রেহানিয়া আবদুল্লাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুর উদ্দিন তানবীর (৩৫), ম্যাক পার্শ্বান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জিন্নাত আরা বেগম (৩৫) ও হাসান উদ্দিন বিপ্লব (সাময়িক বরখাস্ত) গত ৬ মে থেকে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব শিক্ষকসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে গত ৫ মে নোয়াখালীর সুধারাম (সদর) থানায় পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ (আইসিটি) আইনে মামলা করেন হাতিয়ার ম্যাক পার্শ্বান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারী শিক্ষক মামুন অর রশিদ। ওই মামলার প্রধান আসামি সদর উপজেলার মাইজভান্ডার শরীফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। তিনি এখন কারাগারে রয়েছেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, আসামিরা পরস্পরের যোগসাজশে বাদী মামুন অর রশিদের স্ত্রী নলুয়া রেহান আলী চৌধুরীহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকার মোবাইল থেকে ব্যক্তিগত আপত্তিকর ছবি হ্যাক করে ভাইরাল করার ভয় দেখিয়ে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবিসহ অনৈতিক সম্পর্কের প্রস্তাব করেন।

সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হক রনি বলেন, অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে মামলা রুজু করা হয়েছে। পরে অভিযান চালিয়ে মামলার প্রধান আসামি আমজাদ হোসেনকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিরা পলাতক রয়েছেন। তাদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

হাতিয়ার বিদ্যালয়গুলোতে খবর নিয়ে জানা গেছে, প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকরা অনুপস্থিত থাকায় বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানোর পরও অদৃশ্য কারণে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না।

বিদ্যালয়ের সভাপতিরা জানান, কর্তৃপক্ষের বিনা অনুমতিতে এসব শিক্ষকের এতদিন অনুপস্থিত থাকা অস্বাভাবিক।

জানতে চাইলে হাতিয়া উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (টিইও) মো. আবদুল জব্বার বলেন, আমার জানামতে শিক্ষকরা বিদ্যালয়ে উপস্থিত আছেন। কিন্তু জাগো নিউজের হাতে আসা হাজিরা খাতা অনুযায়ী তারা ১৪ দিন অনুপস্থিত বলার পর তিনি ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। পরে অনেকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।

হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শুভাশীষ চাকমা বলেন, বিষয়টি কেউ জানায়নি। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিতে বলবো।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ডিপিও) মো. মনসুর আলী বলেন, এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

পর্নোগ্রাফি মামলায় আসামি

হাতিয়ায় দু’সপ্তাহ ধরে ‘পলাতক’ চার শিক্ষক

আপডেট সময় ১০:০৭:০১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ মে ২০২৪

নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চার শিক্ষক গত ১৪ দিন ধরে অনুপস্থিত। এতে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হলেও অদৃশ্য কারণে কর্তৃপক্ষ নীরব বলে অভিযোগ উঠেছে।

পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এক শিক্ষক আইটিসিটি আইনে মামলা করার পর থেকে তারা পলাতক রয়েছেন।

জানা গেছে, হাতিয়া উপজেলার জাহাজমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমির হোসেন (৫২), মধ্য রেহানিয়া আবদুল্লাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুর উদ্দিন তানবীর (৩৫), ম্যাক পার্শ্বান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জিন্নাত আরা বেগম (৩৫) ও হাসান উদ্দিন বিপ্লব (সাময়িক বরখাস্ত) গত ৬ মে থেকে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব শিক্ষকসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে গত ৫ মে নোয়াখালীর সুধারাম (সদর) থানায় পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ (আইসিটি) আইনে মামলা করেন হাতিয়ার ম্যাক পার্শ্বান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারী শিক্ষক মামুন অর রশিদ। ওই মামলার প্রধান আসামি সদর উপজেলার মাইজভান্ডার শরীফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। তিনি এখন কারাগারে রয়েছেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, আসামিরা পরস্পরের যোগসাজশে বাদী মামুন অর রশিদের স্ত্রী নলুয়া রেহান আলী চৌধুরীহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকার মোবাইল থেকে ব্যক্তিগত আপত্তিকর ছবি হ্যাক করে ভাইরাল করার ভয় দেখিয়ে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবিসহ অনৈতিক সম্পর্কের প্রস্তাব করেন।

সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হক রনি বলেন, অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে মামলা রুজু করা হয়েছে। পরে অভিযান চালিয়ে মামলার প্রধান আসামি আমজাদ হোসেনকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিরা পলাতক রয়েছেন। তাদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

হাতিয়ার বিদ্যালয়গুলোতে খবর নিয়ে জানা গেছে, প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকরা অনুপস্থিত থাকায় বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানোর পরও অদৃশ্য কারণে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না।

বিদ্যালয়ের সভাপতিরা জানান, কর্তৃপক্ষের বিনা অনুমতিতে এসব শিক্ষকের এতদিন অনুপস্থিত থাকা অস্বাভাবিক।

জানতে চাইলে হাতিয়া উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (টিইও) মো. আবদুল জব্বার বলেন, আমার জানামতে শিক্ষকরা বিদ্যালয়ে উপস্থিত আছেন। কিন্তু জাগো নিউজের হাতে আসা হাজিরা খাতা অনুযায়ী তারা ১৪ দিন অনুপস্থিত বলার পর তিনি ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। পরে অনেকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।

হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শুভাশীষ চাকমা বলেন, বিষয়টি কেউ জানায়নি। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিতে বলবো।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ডিপিও) মো. মনসুর আলী বলেন, এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।