নোয়াখালী ০৩:৫১ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হাতিয়ায় ফুটবল টুর্নামেন্টের আড়ালে জুয়ার আসর

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় ০৯:২৮:০৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • / ৪৪১ বার পড়া হয়েছে

নোয়াখালীর হাতিয়ায় চলা মাসব্যাপী গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের আড়ালে জুয়া ও অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার জাহাজমারা ইউনিয়নের ‘নিমতলী সমুদ্র সৈকতে’ দিনের বেলা টুর্নামেন্ট ও রাতের বেলা মেলার নামে এসব চলছে বলে জানা গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, ৯ ফেব্রুয়ারি বিকেলে নিজের নামে মাসব্যাপী এ টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেন সংসদ সদস্য আয়েশা ফেরদৌস আলীর ছেলে ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আশিক আলী অমি। ওই দিন থেকে টুর্নামেন্টস্থলে মেলার নামে রাতভর চলছে মদ, জুয়া, অশ্লীলনৃত্যসহ অসামাজিক কার্যক্রম। এতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন সংসদ সদস্য আয়েশা ফেরদৌস আলী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলীর ছেলে আশিক আলী অমির লোকজন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, হাতিয়ার ‘নিমতলীয় সমুদ্র সৈকতে’ এবার পর্যটকরা বেশি আসছেন। এটা পুঁজি করে ‘সংসদ সদস্যের পরিবারের’ লোক পরিচয় দেওয়া জাহাজমারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মাসুম বিল্লাহ করোনাকালে খোলা মাঠ ঘেরাও করে ‘মোহাম্মদ আলী স্টেডিয়াম’ নাম দিয়ে এ খেলা ও মেলার আয়োজন করেন।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে চেয়ারম্যান মাসুম বিল্লাহ জাগো নিউজকে বলেন, ‘নিমতলী সমুদ্র সৈকতকে জমজমাট করতে এ আয়োজন করা হয়েছে। তবে এখানে কোনো জুয়া বা অসামাজিক কিছু হচ্ছে না।’

এ সংক্রান্ত ভিডিও জাগো নিউজের হাতে আছে জানালে তিনি স্থানীয় এক সাংবাদিকের নাম উল্লেখ করে বলেন, ‘তিনি আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করবেন।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, এখানে মোহাম্মদ আলী তথা এমপি পরিবার যা করবে তার বাইরে যাওয়া বা বিরুদ্ধে বলার সুযোগ কারও নেই। প্রশাসনও কৌশলে তাদের পক্ষে থাকে। এজন্য সাধারণ জনগণও এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে কিছু বলার সাহস পান না।

স্থানীয় সংসদ সদস্যের ছেলে আশিক আলী অমি বলেন, ‘বুধবার বিকেলে খেলার উদ্বোধন করে আমি চলে এসেছি। তবে সেখানে নাগরদোলা চলার কথা। জুয়া বা অন্য কিছু চলছে বলে আমার জানা নেই। যদি চলে তাহলে চেয়ারম্যান কাজটি ভালো করেননি।’

এ বিষয়ে জানতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সেলিম হোসেনকে বার বার ফোন দিয়েও পাওয়া যায়নি। খবর নিয়ে জানা গেছে, তিনি ছুটিতে রয়েছেন। তবে তার কার্যালয় সূত্র জানায়, প্রশাসনের বিনা অনুমতিতে ওই খেলা ও মেলার আয়োজন করা হয়েছে।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, ‘এ বিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আমির হোসেন বলেন, ‘অভিযোগ পেয়ে মেলা বন্ধ করতে বলা হয়েছে।’ কিন্তু এখনো মেলার নামে জুয়ার আসর চলছে জানালে ওসি বলেন, ‘বিষয়টি খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।’

জেলা প্রশাসক (ডিসি) দেওয়ান মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি জেনেছি। করোনার প্রাদুর্ভাবে এটি কীভাবে আয়োজন করা হলো তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

নিউজটি শেয়ার করুন

হাতিয়ায় ফুটবল টুর্নামেন্টের আড়ালে জুয়ার আসর

আপডেট সময় ০৯:২৮:০৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২২

নোয়াখালীর হাতিয়ায় চলা মাসব্যাপী গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের আড়ালে জুয়া ও অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার জাহাজমারা ইউনিয়নের ‘নিমতলী সমুদ্র সৈকতে’ দিনের বেলা টুর্নামেন্ট ও রাতের বেলা মেলার নামে এসব চলছে বলে জানা গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, ৯ ফেব্রুয়ারি বিকেলে নিজের নামে মাসব্যাপী এ টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেন সংসদ সদস্য আয়েশা ফেরদৌস আলীর ছেলে ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আশিক আলী অমি। ওই দিন থেকে টুর্নামেন্টস্থলে মেলার নামে রাতভর চলছে মদ, জুয়া, অশ্লীলনৃত্যসহ অসামাজিক কার্যক্রম। এতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন সংসদ সদস্য আয়েশা ফেরদৌস আলী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলীর ছেলে আশিক আলী অমির লোকজন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, হাতিয়ার ‘নিমতলীয় সমুদ্র সৈকতে’ এবার পর্যটকরা বেশি আসছেন। এটা পুঁজি করে ‘সংসদ সদস্যের পরিবারের’ লোক পরিচয় দেওয়া জাহাজমারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মাসুম বিল্লাহ করোনাকালে খোলা মাঠ ঘেরাও করে ‘মোহাম্মদ আলী স্টেডিয়াম’ নাম দিয়ে এ খেলা ও মেলার আয়োজন করেন।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে চেয়ারম্যান মাসুম বিল্লাহ জাগো নিউজকে বলেন, ‘নিমতলী সমুদ্র সৈকতকে জমজমাট করতে এ আয়োজন করা হয়েছে। তবে এখানে কোনো জুয়া বা অসামাজিক কিছু হচ্ছে না।’

এ সংক্রান্ত ভিডিও জাগো নিউজের হাতে আছে জানালে তিনি স্থানীয় এক সাংবাদিকের নাম উল্লেখ করে বলেন, ‘তিনি আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করবেন।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, এখানে মোহাম্মদ আলী তথা এমপি পরিবার যা করবে তার বাইরে যাওয়া বা বিরুদ্ধে বলার সুযোগ কারও নেই। প্রশাসনও কৌশলে তাদের পক্ষে থাকে। এজন্য সাধারণ জনগণও এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে কিছু বলার সাহস পান না।

স্থানীয় সংসদ সদস্যের ছেলে আশিক আলী অমি বলেন, ‘বুধবার বিকেলে খেলার উদ্বোধন করে আমি চলে এসেছি। তবে সেখানে নাগরদোলা চলার কথা। জুয়া বা অন্য কিছু চলছে বলে আমার জানা নেই। যদি চলে তাহলে চেয়ারম্যান কাজটি ভালো করেননি।’

এ বিষয়ে জানতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সেলিম হোসেনকে বার বার ফোন দিয়েও পাওয়া যায়নি। খবর নিয়ে জানা গেছে, তিনি ছুটিতে রয়েছেন। তবে তার কার্যালয় সূত্র জানায়, প্রশাসনের বিনা অনুমতিতে ওই খেলা ও মেলার আয়োজন করা হয়েছে।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, ‘এ বিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আমির হোসেন বলেন, ‘অভিযোগ পেয়ে মেলা বন্ধ করতে বলা হয়েছে।’ কিন্তু এখনো মেলার নামে জুয়ার আসর চলছে জানালে ওসি বলেন, ‘বিষয়টি খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।’

জেলা প্রশাসক (ডিসি) দেওয়ান মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি জেনেছি। করোনার প্রাদুর্ভাবে এটি কীভাবে আয়োজন করা হলো তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’