নোয়াখালী ১১:১৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হাতিয়ার নিমতলী সৈকতের হাতছানি

হাতিয়া সংবাদদাতা
  • আপডেট সময় ০৩:২৮:৫৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২২
  • / ৪৯৬ বার পড়া হয়েছে

নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার নিমতলী সমুদ্রসৈকতে শিশুদের উচ্ছ্বাস। সাম্প্রতিক চিত্র।

জনবসতির পরই বিস্তীর্ণ খোলা মাঠ। মাঠের মাঝখান দিয়ে সরু রাস্তা। গাড়িতে ২০ মিনিট যাওয়ার পর মিলবে সবুজ কেওড়া বাগান। বাগানের পরই নদীর কোল ঘেঁষে বিশাল সমুদ্রসৈকত। নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার জাহাজমারা ইউনিয়নের বিরিবিরি গ্রামের পূর্বপাশে বেড়িবাঁধের বাইরে এর অবস্থান।

স্থানীয়দের কাছে এটি নিমতলী সি-বিচ নামে পরিচিত। তিন বছর আগে জায়গাটি ছিল জনমানবহীন। তবে এখন দর্শনার্থীদের পদচারণে থাকে মুখর। প্রতিদিনই দর্শনার্থীরা ছুটে আসেন।

সরেজমিন দেখা গেছে, সকাল থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের লোকজন ছুটে আসছেন। দুপুরের পর থেকে বিচে লোকজনের উপস্থিতি বাড়ে। কেওড়া বাগানের পাশ থেকে বিচ পর্যন্ত জনসমাগম হয়।

নিমতলী সি-বিচ উন্নয়ন কমিটির আহ্বায়ক মোস্তফা ফয়সাল বলেন, অনেকেই পরিবার নিয়ে আসেন; আবার কেউ প্রতিষ্ঠানের সহপাঠীদের নিয়ে।

মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) হাতিয়া মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির পাঁচ শতাধিক সদস্য নিমতলীতে বনভোজনে আসেন। কথা হয় সমিতির সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, শিক্ষকদের চাহিদা অনুযায়ী নিমতলীর সি-বিচকে বনভোজনের জন্য নির্ধারণ করা হয়। এখানে বিশাল সমুদ্রসৈকত রয়েছে। পাশে কেওড়া বন। শিক্ষকেরা নিজের মতো ঘুরতে পেরেছেন। আসতে কোনো সমস্যা হয়নি।

১৫ জানুয়ারি বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী বহর নিয়ে পরিদর্শনে আসেন নিমতলী সমুদ্রসৈকতে। প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় সাংসদ আয়েশা ফেরদাউস, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোকাম্মেল হোসেন, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সচিব প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী, পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান জাবেদ আহাম্মেদ প্রমুখ।

নিমতলী সমুদ্রসৈকত পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী বলেন, ‘বিশাল আকৃতির এমন সুন্দর সমুদ্রসৈকত দেশের আর কোথাও নেই। সুন্দরের দিক থেকে কক্সবাজারের চেয়েও কোনো অংশে কম নয় এটি। সবকিছুর সংমিশ্রণ রয়েছে এখানে। দ্রুত এই অঞ্চলকে পর্যটকদের জন্য উপযোগী করে গড়ে তোলা হবে।’

জানা গেছে, নদীর কোল ঘেঁষে প্রাকৃতিকভাবে তৈরি হওয়া এই সমুদ্রসৈকতে দর্শনার্থীদের পদচারণ শুরু হয় ২০১৯ সাল থেকে। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে একটি রাস্তা তৈরি করা হচ্ছে। জনবসতি থেকে প্রায় সাত কিলোমিটার দূরে এই সমুদ্রসৈকতে পর্যটকদের নিরাপত্তা দিতে ব্যবস্থা নিয়েছে জাহাজমারা ইউনিয়ন পরিষদ। স্থানীয় কয়েকজন যুবকের সমন্বয়ে গঠন করা হয়েছে নিমতলী উন্নয়ন কমিটি।

এই কমিটির অন্যতম সদস্য ফরিদ উদ্দিন বলেন, কমিটির সদস্যরা প্রতিনিয়ত পর্যটকদের নিরাপত্তায় কাজ করেন। ইতিমধ্যে কমিটির তত্ত্বাবধানে চালু করা হয়েছে একটি রুচিশীল খাওয়ার হোটেল। ব্যবস্থা করা হয়েছে অস্থায়ী শৌচাগার। পর্যটকদের বাড়তি আনন্দ দিতে বিচে বসানো হয়েছে রঙিন ছাতাসহ বসার টেবিল। নদীর মধ্যে তৈরি করা হয়েছে কাঠের সেতু। রাত্রি যাপনে ব্যবস্থা করা হয়েছে তাঁবুর।

জাহাজমারা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মাসুম বিল্লাহ বলেন, নিমতলী সমুদ্রসৈকতটি এখন হাতিয়ার অন্যতম দর্শনীয় স্থানে পরিণত হয়েছে। পর্যটকদের আগমন বেড়েছে। সমুদ্রসৈকতটি উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

হাতিয়ার নিমতলী সৈকতের হাতছানি

আপডেট সময় ০৩:২৮:৫৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২২

জনবসতির পরই বিস্তীর্ণ খোলা মাঠ। মাঠের মাঝখান দিয়ে সরু রাস্তা। গাড়িতে ২০ মিনিট যাওয়ার পর মিলবে সবুজ কেওড়া বাগান। বাগানের পরই নদীর কোল ঘেঁষে বিশাল সমুদ্রসৈকত। নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার জাহাজমারা ইউনিয়নের বিরিবিরি গ্রামের পূর্বপাশে বেড়িবাঁধের বাইরে এর অবস্থান।

স্থানীয়দের কাছে এটি নিমতলী সি-বিচ নামে পরিচিত। তিন বছর আগে জায়গাটি ছিল জনমানবহীন। তবে এখন দর্শনার্থীদের পদচারণে থাকে মুখর। প্রতিদিনই দর্শনার্থীরা ছুটে আসেন।

সরেজমিন দেখা গেছে, সকাল থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের লোকজন ছুটে আসছেন। দুপুরের পর থেকে বিচে লোকজনের উপস্থিতি বাড়ে। কেওড়া বাগানের পাশ থেকে বিচ পর্যন্ত জনসমাগম হয়।

নিমতলী সি-বিচ উন্নয়ন কমিটির আহ্বায়ক মোস্তফা ফয়সাল বলেন, অনেকেই পরিবার নিয়ে আসেন; আবার কেউ প্রতিষ্ঠানের সহপাঠীদের নিয়ে।

মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) হাতিয়া মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির পাঁচ শতাধিক সদস্য নিমতলীতে বনভোজনে আসেন। কথা হয় সমিতির সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, শিক্ষকদের চাহিদা অনুযায়ী নিমতলীর সি-বিচকে বনভোজনের জন্য নির্ধারণ করা হয়। এখানে বিশাল সমুদ্রসৈকত রয়েছে। পাশে কেওড়া বন। শিক্ষকেরা নিজের মতো ঘুরতে পেরেছেন। আসতে কোনো সমস্যা হয়নি।

১৫ জানুয়ারি বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী বহর নিয়ে পরিদর্শনে আসেন নিমতলী সমুদ্রসৈকতে। প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় সাংসদ আয়েশা ফেরদাউস, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোকাম্মেল হোসেন, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সচিব প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী, পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান জাবেদ আহাম্মেদ প্রমুখ।

নিমতলী সমুদ্রসৈকত পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী বলেন, ‘বিশাল আকৃতির এমন সুন্দর সমুদ্রসৈকত দেশের আর কোথাও নেই। সুন্দরের দিক থেকে কক্সবাজারের চেয়েও কোনো অংশে কম নয় এটি। সবকিছুর সংমিশ্রণ রয়েছে এখানে। দ্রুত এই অঞ্চলকে পর্যটকদের জন্য উপযোগী করে গড়ে তোলা হবে।’

জানা গেছে, নদীর কোল ঘেঁষে প্রাকৃতিকভাবে তৈরি হওয়া এই সমুদ্রসৈকতে দর্শনার্থীদের পদচারণ শুরু হয় ২০১৯ সাল থেকে। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে একটি রাস্তা তৈরি করা হচ্ছে। জনবসতি থেকে প্রায় সাত কিলোমিটার দূরে এই সমুদ্রসৈকতে পর্যটকদের নিরাপত্তা দিতে ব্যবস্থা নিয়েছে জাহাজমারা ইউনিয়ন পরিষদ। স্থানীয় কয়েকজন যুবকের সমন্বয়ে গঠন করা হয়েছে নিমতলী উন্নয়ন কমিটি।

এই কমিটির অন্যতম সদস্য ফরিদ উদ্দিন বলেন, কমিটির সদস্যরা প্রতিনিয়ত পর্যটকদের নিরাপত্তায় কাজ করেন। ইতিমধ্যে কমিটির তত্ত্বাবধানে চালু করা হয়েছে একটি রুচিশীল খাওয়ার হোটেল। ব্যবস্থা করা হয়েছে অস্থায়ী শৌচাগার। পর্যটকদের বাড়তি আনন্দ দিতে বিচে বসানো হয়েছে রঙিন ছাতাসহ বসার টেবিল। নদীর মধ্যে তৈরি করা হয়েছে কাঠের সেতু। রাত্রি যাপনে ব্যবস্থা করা হয়েছে তাঁবুর।

জাহাজমারা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মাসুম বিল্লাহ বলেন, নিমতলী সমুদ্রসৈকতটি এখন হাতিয়ার অন্যতম দর্শনীয় স্থানে পরিণত হয়েছে। পর্যটকদের আগমন বেড়েছে। সমুদ্রসৈকতটি উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।