নোয়াখালী ০৮:১৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভেঙে ফেলা হচ্ছে চাটখিলের পুরনো জমিদার বাড়ি

ডিজিটাল নোয়াখালী ডেস্ক :
  • আপডেট সময় ০২:১২:৫৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • / ৪৮৪ বার পড়া হয়েছে

নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার পাঁচগাও ইউনিয়নের বারইপাড়া গ্রামে জমিদার লক্ষ্মীচন্দ্র মজুমদার বাড়ি অবৈধ দখলের অভিযোগ উঠেছে। সেই বাড়ি ভাঙাও শুরু করেছেন ‘দখলকারীরা’।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন জমিদার লক্ষ্মীচন্দ্র মজুমদরের পৌত্র পরিমল কুমার মজুমদার।

তবে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে তারা খরিদ সূত্রে এই বাড়ির মালিক বলে দাবি করছেন।

পরিমল কুমার মজুমদার তার অভিযোগে বলেন, দেড়শ বছরের পুরনো বাড়িটি নির্মাণ করেন তৎকালীন জমিদার লক্ষ্মীচন্দ্র মজুমদার এবং তার দুই ভাই রামচন্দ্র মজুমদার ও অখিল চন্দ্র মজুমদার। তারা প্রত্যেকে বাড়িটির এক তৃতীয়াংশের মালিক।

“১৯৪৬ সালে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সময় রামচন্দ্র মজুমদার তার অংশ জমিদার লক্ষ্মীচন্দ্র মজুমদারের কাছে ‘মৌখিকভাবে বিক্রি’ করে চলে যান।”

অপরদিকে অখিল চন্দ্র তার অংশ বারইপাড়া গ্রামের মৃত লকিয়ত উল্ল্যার কাছে বিক্রি করেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

পরিমল বলেন, উত্তরাধিকার ও ক্রয় সূত্রে লক্ষ্মীচন্দ্র মজুমদার ও রামচন্দ্র মজুমদারের বাড়িটির মালিক হন লক্ষ্মীচন্দ্র মজুমদারের একমাত্র সন্তান বগলা প্রসন্ন মজুমদার। তিনি [পরিমাল] উত্তরাধিকার সূত্রে এ সম্পত্তির বর্তমান মালিক এবং এসব সম্পত্তি ভোগ দখল করে আসছেন।

“কিন্তু অখিল চন্দ্রের অংশ [এক তৃতীয়াংশ] ক্রয় করার সুযোগে মৃত লকিয়ত উল্যাহর ছেলে কাজল, সজল ও সাহাব উদ্দিন নানা কৌশলে বাড়ির পুরো সম্পত্তি জবর দখলের চেষ্টা চালিয়ে আসছেন।”

জমিদার লক্ষ্মীচন্দ্র মজুমদারের পৌত্র পরিমল কুমার মজুমদার এ ব্যাপারে থানা পুলিশসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েও কোনো ফল পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, বারইপাড়া গ্রামের জমিদার বাড়িতে কিছু শ্রমিক দ্বিতীয় তলার পাকা ভবন ভেঙে ইটসহ অন্যান্য নির্মাণ সামগ্রী সরিয়ে নিচ্ছে। পাকা ভবনের দ্বিতীয় তলার ভাঙার কাজ প্রায় শেষের দিকে।

পরিমল কুমার মজুমদার বলেন, “আমার দাদা ছিল এই এলাকার একজন প্রখ্যাত জমিদার। যার সম্পত্তি সরকারের তালিকায় এখনও লক্ষ্মীচন্দ্র মজুমদার স্টেট নামে বিদ্যমান আছে। ১৯৪৬ সালে সম্পত্তির ওপর এই বাড়িটির নির্মাণ কাজ শেষে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার কারণে তিনি প্রাণভয়ে ভারত চলে যান। পরবর্তী সময়ে আমার বাবা বগলা প্রসন্ন মজুমদার নোয়াখালী সদরে এসে বসবাস করেন। আমার দাদার একমাত্র সন্তান ছিলও আমার বাবা। বর্তমানে উত্তরাধিকার সূত্রে এই সম্পত্তির মালিক আমি।”

পরিমল কুমার মজুমদার আরও বলেন, “১৬ একরের এই সম্পত্তি আমার দাদার নামে রেকর্ড হলেও আমাদের অনুপস্থিতিতে বিভিন্ন নাম ভুলভাবে রেকর্ড হয়। এই সুযোগে আমাদের অনেক সম্পত্তি বিভিন্ন জাল দলিল সৃজনসহ ও জোর জুলুম করে স্থানীয় মৃত লকিয়ত উল্যাহর ছেলে কাজল, সজল ও সাহাব উদ্দিন দখল করে রাখে।”

কিছুদিন আগ থেকে কাজল, সজল ও সাহাব উদ্দিন পুরোনো এই বাড়িটি ভাঙা শুরু করেন বলে পরিমলের অভিযোগ।

তিনি বলেন, “এ নিয়ে প্রতিবাদ করায় আমাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আমি প্রাণভয়ে গ্রামে যেতে পারি না। হুমকির বিষয়ে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে অভিযোগ করেছি।”

এ ব্যপারে মৃত লকিয়ত উল্যাহর ছেলে কাজল বলেন, “জমিদার বাড়িটি আমার বাবা কিনে নিয়েছেন। আমরা এই বাড়িতে ১৯৬৩ সাল থেকে বসবাস করছি। পুরোনো দালান বসবাসের অনুপযোগী হয়ে যাওয়ায় ভেঙে নতুন ভবন নির্মাণের চিন্তা করছি। আমাদের বিরুদ্ধে কারো কোনো অভিযোগ থাকলে তারা আদালতে যেতে পারে। আদালতের রায় নিয়ে আসলে আমরা ছেড়ে দিতে প্রস্তুত আছি।”

এ ব্যাপারে চাটখিল থানার ওসি মো. আবুল খায়ের বলেন, “ঐহিত্যবাহী জমিদার বাড়ির পুরোনো দিনের দালান ভাঙে নেওয়া হচ্ছে অভিযোগ পাওয়ার পর পুলিশ পাঠিয়ে কয়েক বার কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তবে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তাদের দাবি হচ্ছে বাড়িটি তাদের ব্যক্তি মালিকানাধীন সম্পত্তি। এ বিষয়ে লক্ষ্মীচন্দ্র মজুমদারের বংশধরদের আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছি।”

এ ব্যপারে চাটখিল উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) উজ্জ্বল রায় বলেন, “জমিদার লক্ষ্মীচন্দ্র মজুমদারের বংশধরদের পক্ষ থেকে অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা প্রতিপক্ষকে কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছি।”

“এরপর তারা খরিদ সূত্রে নিজেদেরকে ওই বাড়ির মালিক দাবি করে” উল্লেখ করে উজ্জ্বল বলেন, “যেহেতু জায়গাটা সরকারি সম্পত্তি না, তাই এ নিয়ে আমাদের বেশি কিছু করার নেই।”

তবে জমিদার লক্ষ্মীচন্দ্র মজুমদারের বংশধররা যদি মনে করেন বাড়িটার ঐতিহ্য রক্ষা করা দরকার তাহলে তারা দেওয়ানী আদালতে মামলা করতে পারেন এবং আদালত যদি স্থিতিবস্থা বজহায় রাখা আদেশ দিলে যতদিন তা নিস্পত্তি না হবে ততদিন কাজটা বন্ধ থাকবে, বলে উজ্জ্বল।

“তাছাড়া পুরানো স্থাপনা প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর স্বীকৃত সরকারি গেজেটভুক্ত হলে আমদের উপর রক্ষণাবেক্ষনের দায়িত্ব থাকে। তাহলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারতাম,” বলেন তিনি।

পূর্ব পুরুষের সম্পত্তি রক্ষায় জমিদার লক্ষ্মীচন্দ্র মজুমদরের পৌত্র পরিমল কুমার মজুমদারের লিখিত আবেদনের বিষয়ে জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, “আবেদনকারীর অভিযোগটি খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চাটখিল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে।”

নিউজটি শেয়ার করুন

ভেঙে ফেলা হচ্ছে চাটখিলের পুরনো জমিদার বাড়ি

আপডেট সময় ০২:১২:৫৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২২

নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার পাঁচগাও ইউনিয়নের বারইপাড়া গ্রামে জমিদার লক্ষ্মীচন্দ্র মজুমদার বাড়ি অবৈধ দখলের অভিযোগ উঠেছে। সেই বাড়ি ভাঙাও শুরু করেছেন ‘দখলকারীরা’।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন জমিদার লক্ষ্মীচন্দ্র মজুমদরের পৌত্র পরিমল কুমার মজুমদার।

তবে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে তারা খরিদ সূত্রে এই বাড়ির মালিক বলে দাবি করছেন।

পরিমল কুমার মজুমদার তার অভিযোগে বলেন, দেড়শ বছরের পুরনো বাড়িটি নির্মাণ করেন তৎকালীন জমিদার লক্ষ্মীচন্দ্র মজুমদার এবং তার দুই ভাই রামচন্দ্র মজুমদার ও অখিল চন্দ্র মজুমদার। তারা প্রত্যেকে বাড়িটির এক তৃতীয়াংশের মালিক।

“১৯৪৬ সালে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সময় রামচন্দ্র মজুমদার তার অংশ জমিদার লক্ষ্মীচন্দ্র মজুমদারের কাছে ‘মৌখিকভাবে বিক্রি’ করে চলে যান।”

অপরদিকে অখিল চন্দ্র তার অংশ বারইপাড়া গ্রামের মৃত লকিয়ত উল্ল্যার কাছে বিক্রি করেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

পরিমল বলেন, উত্তরাধিকার ও ক্রয় সূত্রে লক্ষ্মীচন্দ্র মজুমদার ও রামচন্দ্র মজুমদারের বাড়িটির মালিক হন লক্ষ্মীচন্দ্র মজুমদারের একমাত্র সন্তান বগলা প্রসন্ন মজুমদার। তিনি [পরিমাল] উত্তরাধিকার সূত্রে এ সম্পত্তির বর্তমান মালিক এবং এসব সম্পত্তি ভোগ দখল করে আসছেন।

“কিন্তু অখিল চন্দ্রের অংশ [এক তৃতীয়াংশ] ক্রয় করার সুযোগে মৃত লকিয়ত উল্যাহর ছেলে কাজল, সজল ও সাহাব উদ্দিন নানা কৌশলে বাড়ির পুরো সম্পত্তি জবর দখলের চেষ্টা চালিয়ে আসছেন।”

জমিদার লক্ষ্মীচন্দ্র মজুমদারের পৌত্র পরিমল কুমার মজুমদার এ ব্যাপারে থানা পুলিশসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েও কোনো ফল পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, বারইপাড়া গ্রামের জমিদার বাড়িতে কিছু শ্রমিক দ্বিতীয় তলার পাকা ভবন ভেঙে ইটসহ অন্যান্য নির্মাণ সামগ্রী সরিয়ে নিচ্ছে। পাকা ভবনের দ্বিতীয় তলার ভাঙার কাজ প্রায় শেষের দিকে।

পরিমল কুমার মজুমদার বলেন, “আমার দাদা ছিল এই এলাকার একজন প্রখ্যাত জমিদার। যার সম্পত্তি সরকারের তালিকায় এখনও লক্ষ্মীচন্দ্র মজুমদার স্টেট নামে বিদ্যমান আছে। ১৯৪৬ সালে সম্পত্তির ওপর এই বাড়িটির নির্মাণ কাজ শেষে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার কারণে তিনি প্রাণভয়ে ভারত চলে যান। পরবর্তী সময়ে আমার বাবা বগলা প্রসন্ন মজুমদার নোয়াখালী সদরে এসে বসবাস করেন। আমার দাদার একমাত্র সন্তান ছিলও আমার বাবা। বর্তমানে উত্তরাধিকার সূত্রে এই সম্পত্তির মালিক আমি।”

পরিমল কুমার মজুমদার আরও বলেন, “১৬ একরের এই সম্পত্তি আমার দাদার নামে রেকর্ড হলেও আমাদের অনুপস্থিতিতে বিভিন্ন নাম ভুলভাবে রেকর্ড হয়। এই সুযোগে আমাদের অনেক সম্পত্তি বিভিন্ন জাল দলিল সৃজনসহ ও জোর জুলুম করে স্থানীয় মৃত লকিয়ত উল্যাহর ছেলে কাজল, সজল ও সাহাব উদ্দিন দখল করে রাখে।”

কিছুদিন আগ থেকে কাজল, সজল ও সাহাব উদ্দিন পুরোনো এই বাড়িটি ভাঙা শুরু করেন বলে পরিমলের অভিযোগ।

তিনি বলেন, “এ নিয়ে প্রতিবাদ করায় আমাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আমি প্রাণভয়ে গ্রামে যেতে পারি না। হুমকির বিষয়ে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে অভিযোগ করেছি।”

এ ব্যপারে মৃত লকিয়ত উল্যাহর ছেলে কাজল বলেন, “জমিদার বাড়িটি আমার বাবা কিনে নিয়েছেন। আমরা এই বাড়িতে ১৯৬৩ সাল থেকে বসবাস করছি। পুরোনো দালান বসবাসের অনুপযোগী হয়ে যাওয়ায় ভেঙে নতুন ভবন নির্মাণের চিন্তা করছি। আমাদের বিরুদ্ধে কারো কোনো অভিযোগ থাকলে তারা আদালতে যেতে পারে। আদালতের রায় নিয়ে আসলে আমরা ছেড়ে দিতে প্রস্তুত আছি।”

এ ব্যাপারে চাটখিল থানার ওসি মো. আবুল খায়ের বলেন, “ঐহিত্যবাহী জমিদার বাড়ির পুরোনো দিনের দালান ভাঙে নেওয়া হচ্ছে অভিযোগ পাওয়ার পর পুলিশ পাঠিয়ে কয়েক বার কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তবে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তাদের দাবি হচ্ছে বাড়িটি তাদের ব্যক্তি মালিকানাধীন সম্পত্তি। এ বিষয়ে লক্ষ্মীচন্দ্র মজুমদারের বংশধরদের আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছি।”

এ ব্যপারে চাটখিল উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) উজ্জ্বল রায় বলেন, “জমিদার লক্ষ্মীচন্দ্র মজুমদারের বংশধরদের পক্ষ থেকে অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা প্রতিপক্ষকে কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছি।”

“এরপর তারা খরিদ সূত্রে নিজেদেরকে ওই বাড়ির মালিক দাবি করে” উল্লেখ করে উজ্জ্বল বলেন, “যেহেতু জায়গাটা সরকারি সম্পত্তি না, তাই এ নিয়ে আমাদের বেশি কিছু করার নেই।”

তবে জমিদার লক্ষ্মীচন্দ্র মজুমদারের বংশধররা যদি মনে করেন বাড়িটার ঐতিহ্য রক্ষা করা দরকার তাহলে তারা দেওয়ানী আদালতে মামলা করতে পারেন এবং আদালত যদি স্থিতিবস্থা বজহায় রাখা আদেশ দিলে যতদিন তা নিস্পত্তি না হবে ততদিন কাজটা বন্ধ থাকবে, বলে উজ্জ্বল।

“তাছাড়া পুরানো স্থাপনা প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর স্বীকৃত সরকারি গেজেটভুক্ত হলে আমদের উপর রক্ষণাবেক্ষনের দায়িত্ব থাকে। তাহলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারতাম,” বলেন তিনি।

পূর্ব পুরুষের সম্পত্তি রক্ষায় জমিদার লক্ষ্মীচন্দ্র মজুমদরের পৌত্র পরিমল কুমার মজুমদারের লিখিত আবেদনের বিষয়ে জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, “আবেদনকারীর অভিযোগটি খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চাটখিল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে।”